ঝিনেদার কাগজ || Jhenedar kagoj || সত্যের আলোয় সুন্দর

২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘যা পাই তাই খাই  যত পাই তত খাই’

যারা উত্তম চরিত্র ও গুণাবলির অধিকারী তারা মানবজাতির জন্য আদর্শ ও অনুসরণীয়। আর যাদের স্বভাব-চরিত্র মন্দ তারা পরিহারযোগ্য। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ উভয় শ্রেণির মানুষের বর্ণনা দিয়েছেন; যেন মানুষ ভালোদের অনুসরণ এবং মন্দদের থেকে দূরে থাকতে পারে। ইমাম কুরতুবি (রহ.) আদর্শের পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আদর্শ হলো এমন বিষয়, যা মানুষ সব কাজে ও সব সময়ে অনুসরণ করে থাকে। নবী-রাসুল (আ.) মানবজাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং তাঁরাই মানবজাতির জন্য আদর্শ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাঁদের অনুসরণের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করেছেন, সুতরাং তুমি তাদের পথের অনুসরণ কর। বলো, এর জন্য আমি তোমাদের কাছে পারিশ্রমিক চাই না, তা তো শুধু বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৯০)
এম এ কবীর 
এক.
বিশে^র এমন কিছু দেশ রয়েছে, যেখানে পবিত্র রমজান মাসে রোজা না রাখলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়। এমন দেশের তালিকায় রয়েছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া। রোজার মাসে দিনের বেলায় খাবার খেতে দেখায় ১১ জনকে গ্রেফতারও করেছে দেশটির পুলিশ।
১৪ মার্চ-২০২৪ (বুধবার) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,নাইজেরিয়া ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও এখানকার ১২ প্রদেশে শরিয়া আইন চালু রয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এসব প্রদেশের মধ্যে একটি হলো কানো। আর এখানকার ইসলামিক পুলিশ ‘হিসবাহ’ নামে পরিচিত এবং প্রতি বছর রমজান মাসে তারা খাবারের দোকান এবং বাজারে তল্লাশি চালায়। ১৩ মার্চ (মঙ্গলবার) গ্রেফতারকৃত ১১ জনের মধ্যে ১০ জন পুরুষ এবং একজন নারী। গ্রেফতারের পর তারা আর ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা মিস করবে না বলে শপথ করার পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। হিসবাহের মুখপাত্র লওয়াল ফাগে বিবিসিকে বলেছেন, আমরা মঙ্গলবার ১১ জনকে  পেয়েছিলাম যার মধ্যে একজন নারীও ছিলেন, যিনি চিনাবাদাম বিক্রি করছিলেন এবং তাকে তার জিনিসপত্র থেকে খেতে দেখা গেছে এবং পরে কিছু লোক আমাদের এই বিষয়টি জানায়। তিনি বলেন, অনুসন্ধান ও তল্লাশি অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে অমুসলিমরা এই অভিযানের আওতার বাইরে। লওয়াল ফাগে বলছেন, আমরা অমুসলিমদের গ্রেফতার করি না। কারণ এটি (রোজা) তাদের পালন করার বিষয় নয়। শুধু একটি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলেই আমরা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করি। আর তা হচ্ছে, যাদের রোজা রাখার কথা, সেসব মুসলমানের কাছে বিক্রি করার জন্য যারা খাবার রান্না করে।
দুই.
জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখন্ড গাজায় রমজান মাসেও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর এ পর্যন্ত অন্তত ৩২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত ও ৭৩ হাজার জন আহত হয়েছে। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি প্রতিশোধমূলক হামলায় জনপদটির বিশাল অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পুরো গাজাতেই এখন খাদ্যসংকট, উত্তরে রীতিমতো দুর্ভিক্ষ চলছে। সেখানে অনাহারে শিশুমৃত্যু ক্রমেই বাড়ছে। এমনই দুর্ভিক্ষের মুখে এবার অন্যরকম এক কঠিন রমজান গাজাবাসীর জন্য।
তিন.
ইসলামে রোজা পালনের বিধান এসেছে নামাজের পর দ্বিতীয় হিজরির ১০ শাবান, মদিনায়। সাওম আরবি শব্দ, এর বহুবচন সিয়াম, ফারসি প্রতিশব্দ রোজা। আর রোজার আভিধানিক অর্থ, পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা, আত্মসংযম, কঠোর সাধনা। পরিভাষায়, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় নিয়তের সঙ্গে যাবতীয় পানাহার ও ইন্দ্রিয় তৃপ্তি থেকে বিরত থাকার নাম সাওম। অন্য অর্থে ‘রমদ, ধাতুর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, দহন, প্রজ্বলন, জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে-ভস্ম করে ফেলা’। রমজান মানুষের যাবতীয় কুপ্রবৃত্তি, নফসের দাসত্ব, জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। রোজা লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, ক্রোধ-ক্ষোভ, অত্যাচার থেকে বিরত রাখে এবং স্রষ্টার সৃষ্টির প্রতি দয়া প্রদর্শনের রিহার্সালও বটে। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান নারী-পুরুষের ওপর এর ট্রায়াল ফরজ। বলা হয়েছে, আল্লাহ নিজ হাতে এর প্রতিদান দেবেন। হাদিসে বলা হয়েছে- সাওম মুমিনের ‘জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের ঢালস্বরূপ’ (বুখারি ও মুসলিম)
রোজাদার রোজা পালনের মাধ্যমে স্বীয় পাপাচার ও যাবতীয় গুনাহকে পরম ধৈর্য, সংযম ও আত্মশুদ্ধির আগুনে জ্বালিয়ে নিঃশেষ করার সুবর্ণ সুযোগ লাভ করেন। যা সত্যনিষ্ঠদের শারীরিক, মানসিক, নৈতিক, মানবিক ও আদর্শিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের এক দারুন সুযোগ। রমজানে প্রকৃত মানুষ ও তার উদার-মানস গঠনের ক্ষেত্রে রোজাদার ব্যক্তি যে প্রশিক্ষণের সুযোগ পান তা অনন্য ও বৈচিত্রময়। মানুষকে নির্লোভ, নিঃস্বার্থ, অমায়িক, সহনশীল, দয়াবান, ধৈর্যশীল, পরিশ্রমী, অধ্যাবসায়ী, মনোবলসম্পন্ন, দৃঢ়চিত্ত, সহিষ্ণু ও সংযমী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে রমজানের প্রশিক্ষণ অনবদ্য ভূমিকা পালন করে।   রোজাদার কেবলমাত্র স্রষ্টার ভয়ে যাবতীয় পানাহার থেকে বিরত থাকেন। যার মধ্য দিয়ে রোজাদারের অস্বিত্বজুড়ে যে প্রবল বিশ্বাসের শক্তি রয়েছে সেটিকে আরো মজবুত করার প্রশিক্ষণ লাভ করেন। বাক-স্বাধীনতা থাকা সত্ত্বেও রোজাদার কম কথা বলার মধ্য দিয়ে অহেতুক প্রলাপ বকার পথে লাগাম টেনে ধরার প্রশিক্ষণ লাভ করেন। মিথ্যা,পরচর্চা ও অশ্লীল কর্ম সম্পাদনের অজস্র দ্বার উন্মোচিত থাকার পরেও রোজাদার নিজেকে নেতিবাচক সব কার্য থেকে স্বীয় দেহ-মনকে নিবৃত্ত করার প্রশিক্ষণ লাভ করেন। সময়মতো খাদ্য গ্রহণ-বর্জন ও  ইসলামের বিধানসমূহ সঠিক পদ্ধতিতে পালনের মাধ্যমে রোজাদার কর্তব্যনিষ্ঠা আর নিয়মানুবর্তিতার প্রশিক্ষণ নেন। ক্ষুধা-তৃষ্ণার অসহ্য যাতনা সইবার মধ্য দিয়ে সমাজের অভাবী, পরমুখাপেক্ষী ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কষ্ট আর দুর্ভোগ অনুধাবনের বাস্তব প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সৎ চিন্তা, কল্যাণকামীতা, পরোপকারিতা, পরের দুঃখ মোছন, দরিদ্রকে ভুলে না যাওয়া- এসব বিষয়ে রোজাদার জীবনঘনিষ্ঠ প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকেন।
 রোজাদার রমজানের অন্য সময়ের চাইতে উন্নতমানের এবং হরেক রকমের খাদ্য গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু এর মধ্য দিয়েও অন্যকে খাওয়ানোর যে মানসিকতা সেই প্রশিক্ষণও অর্জিত হতে পারে। কেননা, রাসুল (সা.) বলেছেন, নিজের জন্য যা পছন্দ করবে অন্যের জন্যও তা পছন্দ করবে।
প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের ওপর তার প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন ও অন্যান্য দরিদ্র-অভাবী বা পরমুখাপেক্ষী মানুষের অধিকার রয়েছে। সুতরাং রমজান আমাদের অন্যের মুখে খাবার তুলে দেয়ার মহান শিক্ষা দেয়। এভাবে মাহে রমজান ও এর সিয়াম সাধনা আমাদের সর্বপ্রকার মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন গুণার্জনের মাধ্যমে সর্বোন্নত চরিত্রের প্রশিক্ষণ প্রদান করে; আমাদের জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে যার বাস্তবিক প্রয়োগ ঘটাতে পারে বাকি ১১ মাসের পথচলায়।
রমজানে শয়তানকে শৃঙ্খল বদ্ধ করে রাখা হয়! তবে অসাধু ব্যবসায়ীদের কর্মকান্ড দেখে অনেকে বলেন, রমজানে শয়তানকে অসাধু ব্যবসায়ীদের পিঠের সঙ্গে বেঁধে দেয়া হয়! নয়তো অমুসলিম দেশগুলোর ব্যবসায়ীরাও রমজান মাসে সীমিত পরিসরে মুনাফা করে পণ্যের সহজলভ্য নিশ্চিত করে। আর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর মানসিকতাতেই থাকে কীভাবে রাতারাতি ভোক্তার পকেট কেটে হরিলুট করা যায়!
রমজান মাসে শয়তানকে বন্দি করে রাখা হয়,পবিত্র কুরআন- হাদিসের উদ্ধৃতিসহ বর্ণনা আছে। এ মাসে শয়তানের পায়ে জিঞ্জির পরিয়ে দেয়া হয়। এর অর্থও বন্দিত্বই। বাংলা পরিভাষায়- অকর্মণ্য করে দেয়া। প্রশ্ন হতে পারে, তাহলে এ মাসে শয়তানিকান্ড বেশি হয় কেন? সুরা ইব্রাহীমের-২২ নম্বর আয়াতে শয়তানের সক্ষমতা নিয়ে কিছু কথা আছে। কুরআনের আরেক জায়গায় বলা হয়েছে শয়তানের কৌশল দুর্বল! মানুষকে গুনাহ করাতে বাধ্য করার সরাসরি শক্তি নেই তার। শয়তান শুধু মানুষকে উসকানি (ওয়াসওয়াসা) দেয়! (সুরা নিসা-৭৬)।
মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রমজান উপলক্ষে বড় বড় চেইনশপ থেকে শুরু করে ছোট দোকানে দেয় বিশাল বিশাল ছাড়। ক্রেতাদের কে কত বেশি মূল্য ছাড় দিতে পারে সেটা নিয়ে চলে রীতিমতো প্রতিযোগিতা। এই সংস্কৃতি কেবল মুসলিম নয়, অন্যান্য ধর্ম অধ্যুষিত দেশেও। অন্য সব ধর্মের লোকেরা রমজান মাসকে শ্রদ্ধা-সমীহ করে। নৈতিক-অনৈতিক বাছ বিচার করে।
অমুসলিম দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় কোনো ধর্মীয় উৎসবের সময় দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ে না, রমজানে দেয়া হয় আরো বেশি ছাড়। রমজানের শুরুতে পণ্যে ছাড় দেয়া ইউরোপের দেশগুলোতে রীতিতে পরিণত হয়েছে। জার্মানিতে চলে অভাবনীয় মূল্য ছাড়। তা ফ্রান্সেও। থাইল্যান্ডেও রমজান মাস উপলক্ষে মুসলমানসহ সবার জন্য পণ্যে বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সম্প্রীতি-বন্ধন ও সহনশীলতা বাড়াতে তারা এমন উদ্যোগ নেয়। এর ঠিক উল্টা চিত্র বাংলাদেশে। রমজান মুসলমানদের ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির মাস বলা হলেও মুসলিমপ্রধান এ দেশটির বাস্তবটা বড় নিষ্ঠুর। এখানে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়ানোর যাবতীয় ছলাকলা, কৌশল, যুক্তিসহ যাবতীয় পরিবেশ নিশ্চিত করে। কিছু পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত থাকলেও কৃত্রিম সংকট তৈরির বন্দোবস্ত তারা আগেই করে রাখে। বড় থেকে ছোট, মহল্লার মুদি দোকানেও শয়তানিকান্ড চলে হরদম। হাদিস বিশারদরা বলে থাকেন, শয়তান শিকলে আবদ্ধ থাকার অর্থ আক্ষরিক ও রূপক উভয় অর্থেই হতে পারে। রূপক অর্থে রমজানে শয়তানের ধোঁকা-প্রবঞ্চনার হার কমে যায়, অন্যায় কাজ কম হয় এবং মানুষের মধ্যে আল্লাহর বিধান পালনের প্রতি আগ্রহ প্রবল থাকে। আর আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে, মানুষ পাপ করে দুই কারণে। একটি তার কৃপ্রবৃত্তি ও বদ-অভ্যাস। আর দ্বিতীয়টি শয়তানের প্ররোচনায়। রমজানে শয়তান বন্দি থাকলেও কুপ্রবৃত্তির কারণে মানুষ পাপ করে থাকে। এ কারণে হয়তো এগার মাসের চর্চা এক মাসে থামে না। রমজানে বন্দি থাকার কারণে শয়তানের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ বন্ধ থাকলেও পরোক্ষ হস্তক্ষেপ বন্ধ থাকে না। তাই মানুষ পাপ করে। কোনো কোনো হাদিস ব্যাখ্যাকারী বলেছেন, রমজানে সব শয়তানকে বন্দি করা হয় না, অতিরিক্ত দুষ্ট শয়তানকে বন্দি করা হয়। তাই অন্য শয়তানদের প্ররোচনায় মানুষ পাপ করে। (ফাতহুল বারি : ৪/১১৪)।
রমজান সংযম-কৃচ্ছ্রসাধনের মাস। তা খাওয়া-দাওয়া, কেনাকাটা, ভরণ-পোষণেও প্রযোজ্য। দিনভর না খেয়ে ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত মনিচ্ছা মতো খাওয়া সংযমের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ জন্য নিজেকে উহ্য রেখে শয়তানকে দায়ী করলে তা একতরফা হয়ে যায়। দিনে পেট খালি রেখে এক রোজা দাবি করে দুপুর থেকে কারো কারো রান্নাঘরে যে কর্মব্যস্ততা চলে তাও সংযমের সঙ্গে যায় না। পানাহার থেকে বিরত থাকার সময় বাদেও যে খাবারের প্রতি সংযম থাকা দরকার আমরা বেশির ভাগ মানুষই তা ভুলে যাই। দীর্ঘ সময় পানাহার থেকে বিরত থাকার পর, শারীরিক ও মানসিক অবস্থা এমন হয় যে, ‘যা পাই তাই খাই’ এবং ‘যত পাই তত খাই’। বিষয়টি ধর্মীয় দিক দিয়ে তো বটেই, স্বাস্থ্যবিজ্ঞানও তা অনুমোদন করে না। দীর্ঘক্ষণ পানাহার থেকে বিরত থাকার পর টেবিলে খাবারের পসরা সাজানো সংযম নয়। এ থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করাও রমজানের শিক্ষা। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি পেট ভর্তি করে খাবার খায় তার পেট (আল্লাহর কাছে) একটি নিকৃষ্ট পাত্র, (তিরমিজি)। সুন্নাত হলো পেটের তিন ভাগের একভাগ খাবার খাবে, একভাগ পানি পান করবে। বাকি এক ভাগ খালি রেখে দেবে, (তিরমিজি)। রোজা-সাহরিতে যত ইচ্ছা খাওয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায়- এ ধরনের কিছু মাসআলা দেয়ার লোক আছে। নিজেকে নির্দোষ রেখে সবকিছুতে শয়তানের দোহাই খোঁজাও অবশ্যই আরেক শয়তানি।
চার.
সব হতাশার মধ্যেও আশার কথা আছে। ফ্রিতে সেহরি খাওয়ানো, রমজানজুড়ে টনকে টন দুধ ১০ টাকা কেজি বিক্রি করা, সারা মাসে গরু জবাই করে কোনো লাভ ছাড়া মাংস বিক্রি করা, ১ টাকা লাভে খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করা, লাখ লাখ মানুষের কাছে বিনামূল্যে ইফতারি পৌঁছে দেয়ার মতো মহৎকর্ম কতিপয় মহৎপ্রাণ মানুষ করে যাচ্ছেন। এই পবিত্র মাসে লাগামহীন ব্যবসা থেকে নিজেকে বিরত রেখে অল্প লাভে কিংবা লাভহীন পদ্ধতিতে যারা রোজাদারদের জন্য স্বস্তি বয়ে আনেন তারা জনতার চোখে ক্ষতিগ্রস্তদের কাতারভুক্ত হতে পারেন কিন্তু রাজাধিরাজের বিচারালয়ে তাদের মতো লাভবান আর কেউ নেই। তাদের ভালো আমল একদিন পাথেয় হয়ে দাঁড়াবে। রমজানের কল্যাণ আমাদের আত্মাকে পবিত্রতায় ভরিয়ে রাখুক। আলহামদুলিল্লাহ।
লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সভাপতি,ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি

আরও পড়ুন

মিয়ানমারে লড়াইয়ের জন্য জড়ো হচ্ছে রোহিঙ্গারা

মিয়ানমারে লড়াইয়ের জন্য জড়ো হচ্ছে রোহিঙ্গারা

অনুবাদ রয়টার্স থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী বসতিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস। ২০১৭ সালে বৌদ্ধ অধ্যুষিত মায়ানমার সরকার দেশটির

যবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ড. এম মজিদের সংবর্ধণা কমিটির প্রস্তুতি সভা

হরিণাকুণ্ডুতে যবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ড. এম মজিদের সংবর্ধণা কমিটির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

হরিনাকুণ্ড প্রতিনিধি ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুর বরেণ্য শিক্ষাবীদ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সলর অধ্যাপক ড. এমএ মজিদের সংবর্ধনা প্রদান কমিটির

মানুষের ভোটার অধিকার হরণ

‘মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি’

মোস্তাফিজুর রহমান, কোটচাঁদপুর মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি। ধর্ষণ সেঞ্চুরি করে উল্লাস করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি।

দরিদ্র মেধাবী ছাত্র নীরবের পাশে মানবতার হাত

দরিদ্র মেধাবী ছাত্র নীরবের পাশে মাও. আবু তালেব

বনি আমিন, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) ঝিনাইদহের মঙ্গলপৈতা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র সালমান ইসলাম নীরবের পড়াশোনার পথে দীর্ঘদিনের আর্থিক

কপ২৯: বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেল দরিদ্র দেশগুলো

কপ২৯: বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেল দরিদ্র দেশগুলো

ডেস্ক রিপোর্ট দীর্ঘ দর-কষাকষির পর সমঝোতায় পৌঁছেছে কপ২৯। বিশ্বের ধনী দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, জলবায়ু সংকটের ঝুঁকিতে থাকা দরিদ্র দেশগুলোকে অভিযোজন