কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলা ও ক্লিনিকের অব্যবস্থাপনায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত ৪ জানুয়ারি উপজেলার নিমতলা বাসস্ট্যান্ডের পাশে অবস্থিত কালীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। তবে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, সুমাইয়া খাতুন নামে এক প্রসূতিকে ওইদিন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের পরপরই নবজাতকটির মৃত্যু ঘটে। প্রসূতির শ্বশুর ইমদাদুল হক অভিযোগ করেন, অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসক ও ক্লিনিকের সেবিকা যথাযথ দায়িত্ব পালন করেননি। তিনি বলেন, “অপারেশন থিয়েটারে তাড়াহুড়ো করে সিজার সম্পন্ন করা হয়। নবজাতকটি প্রথমে কাঁদেনি। নার্সরা কাঁদানোর চেষ্টা করলে কিছুক্ষণ পরে বাচ্চা পায়খানা করে এবং তার পরপরই মারা যায়।”
তিনি আরও বলেন, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি লুকানোর চেষ্টা করে এবং ছাড়পত্রে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করেনি। অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স নিয়ে ক্লিনিকটি পরিচালিত হচ্ছে। এখানে নেই সার্বক্ষণিক চিকিৎসক বা দক্ষ সেবিকা।
সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করা চিকিৎসক প্রতাপ কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “অপারেশন থিয়েটারে আছি, পরে কথা হবে,” এরপর তিনি সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন।
কালীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান দাবি করেন, “আমার ক্লিনিকে নবজাতকের মৃত্যু হয়নি।”
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেন বলেন, “অভিযোগ তদন্তের জন্য আমি শিগগিরই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করব। সত্যতা মিললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, “অপচিকিৎসা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”
ঝিনাইদহ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মিথিলা ইসলাম বলেন, “এ ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, চিকিৎসা সেবার নামে এই ক্লিনিকটি দীর্ঘদিন ধরে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।