এম এ লিতু , কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)
৬ মার্চ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশনের অদূরে বাবরা রেল গেট নামক স্থানে হৃদয় বিদারক এক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে।দূর্ঘটনায় মেহেদি হাসান নামের (২০) এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রের করুন মৃত্যু হয় । মেহেদি হাসান উপজেলার নিয়ামত গ্রামের মোহাম্মদ মাহবুর রহমানের ছেলে । সে শহরের অঙ্কিতা ট্রেডার্সের ইঞ্জিন চালিত নসিমন গাড়ির চালক ছিল ।ঘটনার ২৫ দিন পার হলেও কালীগঞ্জ কলেজ পাড়ায় বিভিন্ন কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা করা অঙ্কিতা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী খামারমুন্দিয়া গ্রামের কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে বিপুল কুমার সন্তান হারা অসহায় হতদরিদ্র পরিবারটির পাশে দাঁড়ানি,নেয়নি খোজ খবর ।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!দুর্ঘটনার দিন রেল গেটে দায়িত্বরত গেটম্যান রুবেল হোসেন জানান, ঘটনার দিন মেহেদির গাড়িটি রেললাইনের উপর আটকে গেলে আমরা কয়েক দফা চেষ্টা করেও গাড়িটি লাইন থেকে সরাতে পারিনি। ইতিমধ্যে বারোবাজার থেকে ট্রেন ছেড়ে আসার সংবাদ পেয়ে মেহেদীকে লাইনের উপর থেকে ধরে এনে ঘরে বসিয়ে রেখে আমারা এগিয়ে যায় লাল পতকা নিয়ে ট্রেন থামাতে । এসময় আমি তাকে নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে বুঝিয়ে বলি। পরবর্তীতে ট্রেন থামাতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসে দেখি মেহেদী কাটা পড়েছে ট্রেনে।জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও কেন সে ট্রেন লাইন থেকে লাটা গাড়িটি সরানোর জন্য গেল এটা আমার বুঝে আসে না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্ঘটনার দিন খুলনা থেকে ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস নামক ট্রেনটি বারোবাজার থেকে ছেড়ে আসে সকাল ১০ টা ৫৫ মিনিটে। ওই ট্রেন মোবারকগঞ্জ রেল স্টেশনে প্রবেশ করে ১১ টা ২৬ মিনিটে। চিত্রা এক্সপ্রেস নামক ট্রেনটি বারোবাজার থেকে ছেড়ে মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশনে প্রবেশের মধ্যকার সময়ে মেহেদীর কাজ করা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী বিপুল কুমারের ফোনালাপ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন।মেহেদির ফোন রেকর্ড বলছে ,গাড়িটি রেল লাইনে আটকে গেলে সে বিপুল কুমারের ফোনে একাধিকবার ফোন করে ।তবে কি কারনে শেষ সময়েও মেহেদি গাড়িটি সরানোর চেষ্টা করতে থাকে এর সঠিক উত্তর মেলেনি ।অনেকে বলছেন ,বিপুল কুমারের ফোনের চাপে মেহেদি গাড়ি সরানোর হয়তো বারংবার চেষ্টা করে দূর্ঘটনায় পড়েছেন ।
নিহত মেহেদির পিতা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বিলাপ করতে করতে বলেন, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার ছেলে নিজের জীবনের কথা না ভেবে ও ডিলারের মালসহ লাটা গাড়ি সরাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা গেছে । অথচ তার মাহাজন বিপুল বাবু কোনো খোঁজ খবর নেননি। তার পাওনা বেতন কড়িও পরিশোধ করেননি।
অঙ্কিতা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী বিপুল কুমারের সাথে কথা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, মেহেদীর মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমিও মর্মাহত। সে আমার কাছে কোনো টাকা পাবে না।ঐদিন আমি তার জানাজায় গেছিলাম। এরপর সেভাবে তার খোঁজখবর রাখতে পারিনি সত্য। এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেকে নানারকম কথা ছড়াচ্ছে। যে কারণে অনেকটা ভয়েই আমি খোঁজ খবর সেভাবে রাখতে পারিনি। আর দুর্ঘটনার দিন আমি মেহেদীর ফোনে কল দিলে অন্যলোক ফোনটি রিসিভ করেছিল।