এম এ কবীর, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহে চিকিৎসকের ভুল অপারেশনে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। ক্লিনিকে একের পর এক রোগী মৃত্যুর পরও জেলার সিভিল সার্জন শুভ্রা রাণী দেবনাথ নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন। কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরই্ ধারাবাহিকতায় রিফাত (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর করুণ মৃত্যু হয়েছে।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!শুক্রবার ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরে অবস্থিত ঢাকা ল্যাব নামের একটি ক্লিনিকে অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশনের পর তার মৃত্যু ঘটে। দরিবিন্নি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র রিফাত হরিণাকুন্ডু উপজেলার সড়াবাড়িয়া গ্রামের বাদশা মুন্সির ছেলে।
অভিযোগ উঠেছে, মৃত্যুর পর রিফাতের মরদেহ প্রতারণার মাধ্যমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ নিয়ে রিফাতের স্বজনরা ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যাথা নিয়ে গত ৪ অক্টোবর শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে স্কুল ছাত্র রিফাত ঢাকা ল্যাব নামে একটি ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ভর্তির পর তার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক ডা. রেজা সেকেন্দার রিফাতের অপারেশন করেন। অপারেশনের কিছুক্ষণ পর রোগীর খিঁচুনি শুরু হয় এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এদিকে পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে স্বজনদের সান্তনা দিতে মৃত রিফাতের লাশ (এনেশথেশিয়ার) অজ্ঞান করার ডা. রেজা সেকেন্দার প্রথমে কুষ্টিয়া ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করেন। রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান তিনঘন্টা আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
ক্লিনিকের একটি সূত্র জানায়, অজ্ঞানের চিকিৎসক ডা. অপূর্ব রিফাতকে অজ্ঞানের পর তার কার্ডিয়াক ফেল করে এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। রিফাতের পিতা বাদশা মুন্সি শনিবার রাতে জানান, তার ছেলে অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন। তিনি এর বিচার চান।
এলাকার ইউপি মেম্বর আল আমিন জানান, রিফাত এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। কিন্তু ভদ্র ন¤্র এই ছিলেটি ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার বলি হয়েছেন। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের কসাই খ্যাত চিকিৎসক এবং ক্লিনিকের মালিক রেজা সেকেন্দারের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঢাকা ল্যাবের ম্যানেজার আসিফ মিয়া ও মালিক আশরাফুজ্জামান লিপনসহ সবাই এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, স্কুল ছাত্র রিফাতের মৃত্যুর পর ওই ক্লিনিকটি বন্ধ করা হবে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি বলেন, বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সমঝোতার ভিত্তিতে ঘটনা মীমাংসা করে ফেলেন। তাই শক্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা যায় না। তিনি বলেন এর আগে একাধিক রোগীর মৃত্যুর পর ডাঃ রেজা সেকেন্দার নিজেই আর অপারেশন করবেন না বলে প্রতিশ্রæতি দেন। কিন্তু তারপরও তিনি একের পর এক অপারেশন করে যাচ্ছেন। এর আগে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের কাছেও ডা. রেজা সেকেন্দার আর অপারেশন করবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছিলেন বলে সিভিল সার্জন জানান।