ঝিনেদার কাগজ || Jhenedar kagoj || সত্যের আলোয় সুন্দর

২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রোহিঙ্গাদেরই এখন সাহায্য চায় মিয়ানমারের জান্তা

ডেস্ক রিপোর্ট

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রায় সাত বছর আগে হাজারো রোহিঙ্গা মুসলিমকে নির্বিচার হত্যা করে।

এই হত্যাযজ্ঞকে জাতিসংঘ জাতিগত নিধনের উদাহরণ বলে অভিহিত করে ।

এখন সেই রোহিঙ্গাদের আবার সাহায্য চায় মিয়ানমারের সামরিক জান্তা।

সংঘাতপূর্ণ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে বিবিসি। এ সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বিবিসি জানতে পেরেছে, যুদ্ধরত জান্তার পক্ষে লড়াইয়ের জন্য সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় অন্তত ১০০ জন রোহিঙ্গাকে বাধ্যতামূলকভাবে সেনাদলে নিযুক্ত করা হয়েছে।

যেসব রোহিঙ্গা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁদের নাম বদল করে এ প্রতিবেদনে ব্যবহার করেছে বিবিসি।

৩১ বছর বয়সী রোহিঙ্গা মোহাম্মদ। সেনাদলে নাম লেখানো প্রসঙ্গে তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘আমি ভীত ছিলাম। কিন্তু আমাকে যোগ দিতে হয়েছিল।’

রাখাইনের রাজধানী সিত্তওয়ের কাছের একটি শিবিরে (ক্যাম্প) থাকেন মোহাম্মদ। এক দশক ধরে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত অন্তত দেড় লাখ রোহিঙ্গা এ ধরনের শিবিরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।

গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ের কথা। একদিন গভীর রাতে মোহাম্মদের কাছে আসেন শিবিরনেতা। তিনি মোহাম্মদকে বলেন, তাঁকে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

সেই রাতের কথা স্মরণ করে মোহাম্মদ বলেন, তাঁকে বলা হয়েছিল, এটা সেনাবাহিনীর আদেশ। আদেশ পালন না করলে তাঁর পরিবারের ক্ষতি করবে সেনাবাহিনী।

বিবিসি বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁরা নিশ্চিত করেছেন, সেনা কর্মকর্তারা শিবিরগুলোর আশপাশে ঘোরাফেরা করছেন। তাঁরা তরুণ রোহিঙ্গাদের সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য হাজিরার নির্দেশ দিচ্ছেন।

মোহাম্মদের মতো রোহিঙ্গা পুরুষদের জন্য চরম পরিহাসের বিষয় হলো, মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা এখনো নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত। তাঁরা নানা ধরনের বৈষম্যমূলক বিধিনিষেধের শিকার। এই যেমন তাঁরা নিজ সম্প্রদায়ভুক্ত এলাকার বাইরে যাওয়া-আসা করতে পারেন না।

২০১২ সালে রাখাইনের বসতি থেকে লাখো রোহিঙ্গা বিতাড়িত হন। বসতি থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর অনেক রোহিঙ্গা বিভিন্ন শিবিরে থাকতে বাধ্য হন।

এ ঘটনার ৫ বছর পর ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস নিধন অভিযান শুরু করে। এ অভিযানের মুখে সাত লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।

সে সময় মিয়ানমারে হাজারো রোহিঙ্গা হত্যা ও ধর্ষণের শিকার হন। রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

এখন মিয়ানমারের রাখাইনে প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা আছেন।

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমার এখন নেদারল্যান্ডসের হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বিচারের মুখোমুখি।

সম্প্রতি আরাকান আর্মি নামের একটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে রাখাইনের বিশাল এলাকা হারায় মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। এ ঘটনার পর মিয়ানমারের জান্তা জোরপূর্বক রোহিঙ্গাদের সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত করছে।

জান্তাবিরোধী চলমান সংঘাতে রাখাইনে সেনাবাহিনীর কামানের গোলা ও বিমান হামলায় বেশ কিছু রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।

দেশটির অন্যান্য অংশে বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলার মুখে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।

সংঘাতে মিয়ানমার জান্তার বিপুলসংখ্যক সেনা নিহত ও আহত হয়েছেন। অনেক সেনা আত্মসমর্পণ করেছেন। অনেকে দলত্যাগ করেছেন। এই ক্ষতি, এই ঘাটতি পূরণ করা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জন্য কঠিন।

পরিস্থিতি এমনই যে মিয়ানমারে এখন খুব কম লোকই খুঁজে পাওয়া যাবে, যাঁরা দেশটির অজনপ্রিয় জান্তা সরকারের জন্য নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিতে আগ্রহী।

আর রোহিঙ্গাদের আশঙ্কা, এ কারণেই তাঁদের আবার লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। যে যুদ্ধে জান্তা হেরে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, সেই যুদ্ধে রোহিঙ্গাদের বলি বানানো হচ্ছে।

মোহাম্মদ বলেন, তাঁকে সিত্তওয়ের ২৭০তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

২০১২ সালের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সময় বসতি থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর রোহিঙ্গাদের এই শহরে (সিত্তওয়ে) বসবাস নিষিদ্ধ করা হয়।

মোহাম্মদ বলেন, ‘কীভাবে গুলি ভরতে হয়, চালাতে হয়, তা আমাদের শেখানো হয়েছিল।’

সেনাবাহিনীতে নাম লেখাতে বাধ্য করা আরেক দল রোহিঙ্গার একটি ভিডিও দেখেছে বিবিসি। ভিডিওতে দেখা যায়, রোহিঙ্গাদের বিএ–৬৩ রাইফেল চালানো শেখানো হচ্ছে।

মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি কেন যুদ্ধ করছি, সে ব্যাপারে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। তারা (সেনাবাহিনী) যখন আমাকে একটি রাখাইন গ্রামে নিয়ে গুলি করতে বলে, আমি গুলি করি।’

আরও পড়ুন

মিয়ানমারে লড়াইয়ের জন্য জড়ো হচ্ছে রোহিঙ্গারা

মিয়ানমারে লড়াইয়ের জন্য জড়ো হচ্ছে রোহিঙ্গারা

অনুবাদ রয়টার্স থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী বসতিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস। ২০১৭ সালে বৌদ্ধ অধ্যুষিত মায়ানমার সরকার দেশটির

যবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ড. এম মজিদের সংবর্ধণা কমিটির প্রস্তুতি সভা

হরিণাকুণ্ডুতে যবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ড. এম মজিদের সংবর্ধণা কমিটির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

হরিনাকুণ্ড প্রতিনিধি ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুর বরেণ্য শিক্ষাবীদ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সলর অধ্যাপক ড. এমএ মজিদের সংবর্ধনা প্রদান কমিটির

মানুষের ভোটার অধিকার হরণ

‘মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি’

মোস্তাফিজুর রহমান, কোটচাঁদপুর মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি। ধর্ষণ সেঞ্চুরি করে উল্লাস করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি।

দরিদ্র মেধাবী ছাত্র নীরবের পাশে মানবতার হাত

দরিদ্র মেধাবী ছাত্র নীরবের পাশে মাও. আবু তালেব

বনি আমিন, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) ঝিনাইদহের মঙ্গলপৈতা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র সালমান ইসলাম নীরবের পড়াশোনার পথে দীর্ঘদিনের আর্থিক

কপ২৯: বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেল দরিদ্র দেশগুলো

কপ২৯: বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেল দরিদ্র দেশগুলো

ডেস্ক রিপোর্ট দীর্ঘ দর-কষাকষির পর সমঝোতায় পৌঁছেছে কপ২৯। বিশ্বের ধনী দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, জলবায়ু সংকটের ঝুঁকিতে থাকা দরিদ্র দেশগুলোকে অভিযোজন