ডেস্ক রিপোর্ট
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর রামপুরায় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন পরিদর্শন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে বিটিভি ভবনে প্রবেশ করেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবারের সহিংসতায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিটিভির সব বিভাগ পরিদর্শন করেন তিনি।
বিটিভি ভবনে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ দেখে প্রধানমন্ত্রীকে হতাশ ও অসন্তুষ্ট দেখা যায়।
ধ্বংসযজ্ঞ দেখে বিটিভির কর্মকর্তারা তাঁদের চোখের জল ধরে রাখার চেষ্টা করলে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। তখন প্রধানমন্ত্রীকেও অশ্রুসিক্ত চোখে দেখা গেছে।
এ সময় বিটিভির মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিটিভি ভবনে ভয়াবহ হামলার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন।
অনুষ্ঠানে বিটিভি সদর দপ্তর ও বিটিভি ভবনে ভাঙচুরের একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বিটিভির মহাব্যবস্থাপক মাহফুজা আক্তারকে অশ্রুসিক্ত নয়নে সান্ত্বনা দিতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে।
পরিদর্শনকালে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খন্দকার ও প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১৮ জুলাই বিকেলে বিটিভি ভবনের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা। তারা প্রথমে সেখানে পার্ক করা কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয়। পরে বিটিভি ভবনের ভেতরে গিয়ে বিভিন্ন ফ্লোরের বিভিন্ন অংশে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
একই দিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিটিভির নিয়ন্ত্রণ নেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
গতকাল বুধবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শনের এক দিন পর প্রধানমন্ত্রী বিটিভি ভবন পরিদর্শন করলেন।
বিটিভির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হামলায় বিটিভির বিভিন্ন অবকাঠামো, সম্প্রচার সরঞ্জাম, নকশা বিভাগ, অফিস ভবন ও কক্ষ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
ভাঙচুরের ঘটনায় ১৯৬৪ সাল থেকে সংরক্ষিত অমূল্য প্রাচীন জিনিস দিয়ে সজ্জিত একটি টেলিভিশন জাদুঘর এবং মুজিব কর্নার, মুক্তিযুদ্ধের স্মারক, অভ্যর্থনা ও ওয়েটিং রুমের আসবাবপত্র, কম্পিউটার, শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) এবং অন্যান্য জিনিসপত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ ছাড়া প্রায় ৪০টি কম্পিউটার, ১০০টি টেলিভিশন সেট ও কম্পিউটার ল্যাবের আসবাবপত্র, প্রশিক্ষণ কক্ষ ও প্রিভিউ রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লিফট, নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম, সিসিটিভি ক্যামেরা ও মনিটরিং সেটও ভাঙচুর করা হয়।
যানবাহন ভবন ও শেড, ক্যানটিন ও নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ কক্ষ; একটি সম্প্রচার ওবি ভ্যানসহ ১৭টি গাড়ি, ২১টি মোটরসাইকেলে আগুন এবং ৯টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
এ ছাড়া অডিটরিয়াম, লাউঞ্জ, ডিজাইন, মেকআপ, ওয়ার্কশপ, গ্রাফিকস রুম, স্টোর/ওয়ার্ডরোব রুম ও ২০টি গ্রাফিকস কম্পিউটারও ভাঙচুর করা হয়।
নকশার শেড, স্টুডিওর ছাদ, দেয়াল, ভবন ও নাগরিক অবকাঠামো; কেন্দ্রীয় শীতাতপনিয়ন্ত্রণ-ব্যবস্থা এবং প্রায় ৭০টি এয়ার কন্ডিশনার (এসি); অফিশিয়াল আসবাবপত্র, ৫টি ফটোকপি মেশিন ও প্রায় ৫০টি অফিশিয়াল কম্পিউটারও ভাঙচুর করা হয়।
১০টি কম্পিউটার ওয়ার্ক স্টেশন, বৈদ্যুতিক তার, সুইচ, স্পর্শকাতর যন্ত্রপাতি, রেকর্ডিং ক্যামেরা, আলোর উৎস-সম্পর্কিত সরঞ্জামসহ ১০০ মনিটরিং সেট; গুরুত্বপূর্ণ দাপ্তরিক ফাইল নথি শিল্পীর সম্মানী-সম্পর্কিত খাতা, ব্যাংক বই, ভাউচার, অডিট বিল ইত্যাদিও নষ্ট করা হয়।