ঝিনেদার কাগজ || Jhenedar kagoj || সত্যের আলোয় সুন্দর

২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ফেসবুকের গুজব শুনে হাতীবান্ধা সীমান্তে জড়ো হন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা

ফেসবুকের গুজব শুনে হাতীবান্ধা সীমান্তে জড়ো হন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা

ডেস্ক রিপোর্ট

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী উত্তর গোতামারী গ্রামের শূন্যরেখায় গত শুক্রবার কয়েক হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী জড়ো হয়েছিলেন। ‘ভারতের নেতারা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে এসে কথা বলবেন’, এমন খবর পেয়ে তাঁরা সীমান্তে এসেছিলেন বলে স্থানীয় অন্তত ১০ জন প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

তবে শেষ পর্যন্ত কোনো নেতা সেখানে আসেননি। পরে তাঁরা বাড়িতে ফিরে যান। উত্তর গোতামারী গ্রামের গোয়াশ্মশানঘাটের পাশে খরপো নদী। সেখান থেকে প্রায় তিন শ গজ দূরে কাঁটাতারের বেড়া। ওপারে ভারতের কোচবিহার জেলার শীতলকুচি থানার পাঠানতলী গ্রাম। গত শনিবার ও রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, সীমান্তে বিএসএফ সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। স্থানীয় লোকজন জানান, শুক্রবার সকাল থেকেই হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন উত্তর গোতামারী গ্রামের শূন্যরেখায় জড়ো হতে থাকেন।

খবর পেয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে ঘরে ফেরার আহ্বান জানান। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা কাঁটাতারের বেড়ার কাছে শূন্যরেখার খরপো নদীতে জড়ো হয়ে থাকেন। কেউ কেউ ভারতে ঢোকার চেষ্টা করলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাধা দেয়। পরে তাঁরা বাড়িতে ফিরে যান।

এ ঘটনায় গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে বিজিবিসহ স্থানীয় প্রশাসন। ঘটনাস্থলে যাওয়া গোতামারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেখলাম। লেখা ছিল, ‘‘আপনারা এই উত্তর গোতামারী শ্মশানঘাটে আসেন মিটিং হবে।’’ ফেসবুকের এই স্ট্যাটাসের কারণেই সকাল থেকে হাজার হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিভিন্ন উপজেলা থেকে এখানে আসেন বলে মনে হচ্ছে।’

উত্তর গোতামারী এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা সনজিত প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি হাজার হাজার লোক আমাদের সীমান্তে কাঁটাতারের কাছে জড়ো হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম, ভারতকে জানানোর জন্য তাঁরা এখানে এসেছেন।’

কাঁটাতারের কাছে জড়ো হওয়া কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, তাঁদের বাড়ি একটু দূরে। গত সোমবার রাতে কিছু দুর্বৃত্ত তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ভারতের নেতারা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে আসবেন এবং তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন খবর পেয়ে তাঁরা এসেছেন। তবে কোথায় খবর পেয়েছেন, তাঁরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি। হাতীবান্ধা উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অশ্বিনী কুমার বসুনিয়া বলেন, তাঁর বাড়ির পাশ দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু লোক ভারত সীমান্তের দিকে যেতে দেখে তিনি জানতে চান, তাঁরা কোথায় যাচ্ছেন? জবাবে তাঁরা জানান, বিএসএফ তাঁদের ডেকেছে। পরে সীমান্তে গিয়ে দেখেন, অনেক লোক জড়ো হয়েছেন। এ সময় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা বলেন, তাঁরা বিএসএফের সঙ্গে কথা বলবেন। তিনি বলেন, ‘বিএসএফের ডাকার বিষয়টি গুজব। পরে তাঁদের বুঝিয়ে বাড়িতে ফেরত যেতে বলি।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। এ সময় তাঁদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হিন্দুদেরও কারও কারও বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হয়। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, এমন খবর ভারতীয় গণমাধ্যমের নজরে আনতে আওয়ামী লীগের কেউ কেউ ফেসবুকে গুজব ছড়িয়েছেন। সেই গুজবে ভুক্তভোগীসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সেখানে জড়ো হন।

উত্তর গোতামারী গ্রামের বাসিন্দা শাহ আলম বলেন, দূরদূরান্ত থেকে আসা লোক প্রথমে সীমান্তের কাছে জড়ো হন। পরে তাঁরা বিএসএফের সঙ্গে দেখা করতে মাঝ নদীতে চলে যান। তিনি বলেন, হাতীবান্ধার উত্তর গোতামারী শ্মশানঘাটে ভারতীয় নেতারা কাঁটাতারের বেড়ার কাছে আসবেন বলে অনেকে ফেসবুকে দেখেছেন। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারতীয় কেউ সেখানে আসেননি। শুধু বিএসএফ ছিল। পরে স্থানীয় বিজিবি ও বিএসএফ তাঁদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠায়। গোতামারী ইউপির চেয়ারম্যান মোনাবেরুল ইসলামও সেদিন ঘটনাস্থলে ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি বেলা ১১টার দিকে সীমান্তে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জড়ো হওয়ার খবর পাই। পরে সেখানে গিয়ে দেখি, আমার এলাকার দু-একজন ছাড়া সবাই বাইরের। এরপর আস্তে আস্তে ভিড় বাড়তে থাকে। সেখানে আসা লোকজনের কাছে কেন এসেছেন জানতে চাইলে বলেন, “ওপারে ভারতের লোকজন আসবে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবে।”

কিন্তু কী বিষয়ে কথা বলবে, তা কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। শুক্রবার দিনভর জড়ো হওয়া হিন্দুদের ভিড় সামলাতে বিজিবি ও পুলিশকে হিমশিম খেতে দেখা যায়। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ও পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, ‘আমি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা নির্দিষ্ট করে কোনো অভিযোগ বলতে পারছেন না। কেউ বলছেন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সব মিলিয়ে তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি।’

আরও পড়ুন

মিয়ানমারে লড়াইয়ের জন্য জড়ো হচ্ছে রোহিঙ্গারা

মিয়ানমারে লড়াইয়ের জন্য জড়ো হচ্ছে রোহিঙ্গারা

অনুবাদ রয়টার্স থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী বসতিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস। ২০১৭ সালে বৌদ্ধ অধ্যুষিত মায়ানমার সরকার দেশটির

যবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ড. এম মজিদের সংবর্ধণা কমিটির প্রস্তুতি সভা

হরিণাকুণ্ডুতে যবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ড. এম মজিদের সংবর্ধণা কমিটির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

হরিনাকুণ্ড প্রতিনিধি ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুর বরেণ্য শিক্ষাবীদ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সলর অধ্যাপক ড. এমএ মজিদের সংবর্ধনা প্রদান কমিটির

মানুষের ভোটার অধিকার হরণ

‘মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি’

মোস্তাফিজুর রহমান, কোটচাঁদপুর মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি। ধর্ষণ সেঞ্চুরি করে উল্লাস করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি।

দরিদ্র মেধাবী ছাত্র নীরবের পাশে মানবতার হাত

দরিদ্র মেধাবী ছাত্র নীরবের পাশে মাও. আবু তালেব

বনি আমিন, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) ঝিনাইদহের মঙ্গলপৈতা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র সালমান ইসলাম নীরবের পড়াশোনার পথে দীর্ঘদিনের আর্থিক

কপ২৯: বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেল দরিদ্র দেশগুলো

কপ২৯: বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেল দরিদ্র দেশগুলো

ডেস্ক রিপোর্ট দীর্ঘ দর-কষাকষির পর সমঝোতায় পৌঁছেছে কপ২৯। বিশ্বের ধনী দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, জলবায়ু সংকটের ঝুঁকিতে থাকা দরিদ্র দেশগুলোকে অভিযোজন