সাইফুল ইসলাম, ঝিনাইদহ
ক্ষমতায় কি না হয়। বড় চেয়ার হলে যেন আর কিছু লাগে না। জ্ঞানী গুণী সবাই যেন চেয়ে থাকে ওই বড় চেয়ারের কর্তার দিকে। তাতে কর্তা বুঝুক আর নাইবা বুঝুক। এমন এক ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার খামার মুন্দিয়া গাজেম আলী দাখিল মাদ্রাসার সুপার রবিউল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক জাকারিয়া, আইসিটি বিভাগের শিক্ষক মোদাচ্ছের হোসেন, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী , হাসিবুল (অফিস সহকারী ) হাবিবুর (নিরাপত্তা প্রহরী) আ. রাজ্জাক (নৈশ্য প্রহরী), আয়া মেহরিন এবং দপ্তরি মিন্টুর বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা, নিয়োগ বাণিজ্য, টিউশন ফি, অর্থ আত্মসাৎ, অসৌজন্যমূলক আচরণ, স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চার তলা ভবন মাদ্রাসাটির সুপার স্বৈরাচারী আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি রবিউল ইসলামের অফিস কক্ষে কেউ গেলে বসতে দেওয়ার মতো কিছু নেই। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কক্ষে তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণির পাঁচ জন শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন এক শিক্ষিকা। ক্লাসে প্রতিষ্ঠানের কোন আয়-ব্যয়ের হিসাব নেই। সব হিসাব যেন মাদ্রাসার সুপার রবিউল ইসলামের পকটে। এনটিআরসিএ নিয়োগ প্রাপ্ত তিন শিক্ষকের কাছ থেকে জোরপূর্বক ২৪ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন তিনি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণির পার রেজিষ্ট্রেশন ফি ৭৪ টাকা। তিনি নিয়েছেন ৫০০ টাকা এদিকে ৬ষ্ট শ্রেণির রেজিষ্ট্রেশন ফি ৫৪ টাক হলেও নিয়েছেন ৩০০ টাকা। তাতে কোন রশিদ ব্যবহার করা হয় নি। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হাসিবুল ও হাবিবুর দীর্ঘ দিন মাদ্রাসায় না এসে সুপার ওলামা লীগের সভাপতি রবিউলের সহযোগিতায় তোলেন বেতন। এদিকে মাদ্রাসার কোন ওয়াশ রুম,বাথরুম ব্যবহার করার পরিবেশ নেই। কোন বাথরুমে নেই বদনা। বিশুদ্ধ খাবার পানির কোন ব্যবস্থায় নেই সেখানে। ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ দিলেই খেতে হয় তাড়ার সাথে বকা। এ যেন এক ভূতের বাড়ির গল্প।
এদিকে বুদ্ধি দাতা স্বাক্ষর জালকারী সহকারী শিক্ষক জাকারিয়ার কাজ হলো মাদ্রাসার সমস্ত কাগজপত্র থেকে শুরু করে রেজুলেশনসহ বেতন করার সাক্ষরগুলো জাল করা। তিনি ঐ মাদ্রাসায় সুপার হওয়ার জন্য ও গোপনে তদবির করছেন। কিন্তু তার শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে সুপার রবিউল ইসলাম বলেন জাকারিয়া ফাজিল পাশ কিন্তু জাকারিয়া বলেন ২০০৪ সালে কামিল পাশ করেন এটা নিয়েও বিতর্কীত তিনি।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মিন্টু মাদ্রাসায় আসেন লুঙ্গি পরিধান করে আর আয়া মেহরিন তিনি তার কাজ না করে মোবাইল টিপা এবং ছাত্রছাত্রীদের সাথে অসভনীয় আচরণ করাই হলো তার কাজ। কারণ মাদ্রাসার সুপার রবিউল ইসলাম যে তাদের দুজনের দিয়েও শ্রেণি কক্ষের ক্লাস নিতে বাধ্য করেন। নৈশ প্রহরী আব্দুর রাজ্জাক রাতে ডিউটির পরিবর্তে করেন দিনে ডিউটি।
সিনেমার গল্পকে হার মানিয়েছেন ঐ মাদ্রাসার নীতি বাক্য বলা কম্পিউটার শিক্ষক মোদাচ্ছেদ হোসেন। গতমাসে যে সরকারি ভাবে ফ্রিতে ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণির মেয়েদের জরায়ু মুখের ক্যান্সার টিকা দেওয়ার কথা সেই নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে শিক্ষক মোদাচ্ছেদ হোসেন প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের থেকে জোরপূর্বক ভাবে ৩০ টাকা করে নিয়েছেন। শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করাই যেন তাদের কাজ। ওলামা লীগের সভাপতি ও অত্র মাদ্রাসার সুপার রবিউল ইসলামের এতো দূর্নীতির পেছনে সাহস যুগিয়েছেন তার ছেলে আওয়ামী লীগ স্বৈরশাসকের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি খন্দকার হাবিব আহসান। তিনি এখন পালাতক।
এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী,আশরাফুল ইসলাম, নিরব,আবু হুরায়রা প্রমূখ বলেন, মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মিন্টু আসেন লুঙ্গি পরিধান করে আর আয়া মেহরিন তিনি তার কাজ না করে মোবাইল টিপা এবং ছাত্রছাত্রীদের সাথে অসভনীয় আচরণ করেন। কারণ মাদ্রাসার সুপার তাদের দুজনের দিয়েও শ্রেণি কক্ষের ক্লাস নিতে বাধ্য করেন। নৈশ প্রহরী আব্দুর রাজ্জাক রাতে ডিউটির পরিবর্তে করেন দিনে ডিউটি। দুই জন কর্মচারী মাদ্রাসায় না এসেও বেতন তুলেন। এদিকে শিক্ষার্থীদের জরায়ু মুখের ক্যান্সারের টিকা দিতে সুপারের নির্দেশে জোরপূর্বক ভাবে মোদাচ্ছেদ স্যার ৩০ টাকা করে নিয়েছেন।
তারা আরও বলেন, অষ্টম শ্রেণির পার রেজিষ্ট্রেশন ফি নিয়েছেন ৫০০ টাকা এদিকে ৬ষ্ট শ্রেণির রেজিষ্ট্রেশন ফি নিয়েছেন ৩০০ টাকা। তাতে রশিদ ব্যবহার করা হয় নি। এদিকে মাদ্রাসার ওয়াশ রুম,বাথরুম ব্যবহার করার পরিবেশ নেই। বাথরুমে নেই বদনা। বিশুদ্ধ খাবার পানি। এসব বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা ইউএনও এবং অত্র প্রতিষ্ঠানের সুপার রবিউল ইসলামের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি।
এ বিষয়ে সুপার রবিউল ইসলাম সমস্ত অপকর্মকাণ্ডকে ভুল শিকার করে বলেন আমাকে একবার সুযোগ দিন আমরা শুধরে নিবো। তিনি আরও বলেন ওলামা লীগের সভাপতি ছিলাম কোন কাগজ পত্রে নয় আর ওলামা দলের সভাপতি হবো এগুলো রাজনৈতিক ব্যপার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনটিআরসিএ নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকগন বলেন, আমাদের তিন জনের থেকে ২৪ হাজার টাকা অত্র প্রতিষ্ঠানের সুপার রবিউল ইসলামের মাধ্যম দিয়ে পান্তা ডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাইদুর রহমান জোরপূর্বক ভাবে নিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের জরায়ু মুখের ক্যান্সার টিকা দেওয়ার নামে ৩০ টাকা করে নিয়েছে বিষয়টি ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন হাদী জিয়া উদ্দিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি সঠিক হয় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সমস্ত বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা ইউএনও দেদারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা খাতা দেখে জানাতে পারবো।
এবিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) জনাব আজহারুল ইসলাম বলেন,বিষয়টি শোনার পর আমরা মাদ্রাসায় গিয়েছি। ঐ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন অভিযোগ দিয়েছে। সুতারং তদন্ত চলছে। যদি ঘটনা সত্য হয় তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো।