বনি আমিন, কালীগঞ্জ
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। দুই মেয়ের হাসি আর স্ত্রীর চোখে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য প্রতিদিন পরিশ্রম করে যান আলী হোসেন (৬০)। কিন্তু আজ তার সেই জীবন থমকে গেছে। কোটচাঁদপুর-কালীগঞ্জ সড়কের একটি দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে তার বাম পা। এখন তিনি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জীবনের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছেন, চোখে জল আর হৃদয়ে বিষাদ।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!২৪ জানুয়ারি সকাল ৭টায় কোটচাঁদপুর থেকে কালীগঞ্জগামী একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান এবং বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে পাতিবিলা বটতলা এলাকায়। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ভ্যানচালকসহ তিনজন। তাদের মধ্যে আলী হোসেনের অবস্থা সবচেয়ে মর্মান্তিক। ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে তার বাম পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
জানা গেছে, আহত আলী হোসেন পেশায় একজন নলকূপ মিস্ত্রী। জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনের মতোই বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন ঘন কুয়াশা ও ভেজা রাস্তার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারানো ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে তার জীবন স্রোত বদলে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার মামুনুর রশিদ বলেন, “খবর পাওয়ার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাস্তার কর্দমাক্ত অবস্থা এবং অতিরিক্ত কুয়াশার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।”
আহত আরও দুজন—জয়নাল হোসেন (৫০) এবং আজিবার (৫০)—প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু আলী হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নাহিদ হাসান জুয়েল বলেন, “তার অবস্থা খুবই গুরুতর। তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা না পেলে প্রাণহানির ঝুঁকি ছিল।”
দুই কন্যা সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে আলী হোসেনের পরিবার এখন নিদারুণ দুশ্চিন্তায়। একদিকে পিতার শরীরের চিরস্থায়ী ক্ষতি, অন্যদিকে পরিবারের আয়ের উৎস বন্ধ হওয়ার শঙ্কা তাদের চোখে অশ্রু এনে দিয়েছে।