ঝিনেদার কাগজ || Jhenedar kagoj || সত্যের আলোয় সুন্দর

২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে কেন দুষছে ইসরায়েল

ডেস্ক রিপোর্ট

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

গাজায় যুদ্ধবরিতির যে প্রস্তাবে হামাস রাজি হয়েছে, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা বলছেন, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে পরিবর্তন এনে এরপর তা হামাসকে দিয়েছেন। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রও জানত। কিন্ত এই পরিবর্তনের বিষয়ে ইসরায়েলকে কিছু জানানো হয়নি।

ইসরায়েলের একাধিক কর্মকর্তা মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসকে এসব কথা বলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যায় হামাসের পক্ষ থেকে হঠাৎ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হওয়ার ঘোষণায় ‘বিস্মিত’ হয়েছে ইসরায়েল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার টাইমস অব ইসরায়েলকে বলেন, হামাসের ঘোষণা আসার আগে ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাব সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি। হামাস যে প্রস্তাবে রাজি হয়েছে তাতে কী কী বিষয় ছিল তা–ও দেখেনি ইসরায়েল।

বিগত সাত মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় গাজায় প্রায় ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতিতে যেতে ইসরায়েলের ওপর ব্যাপকভাবে আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি হয়েছে। এতদিন ইসরায়েলকে একচেটিয়া সমর্থন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনও চাপের মুখে পড়েছে। ইসরায়েলের ফিলিস্তিনিদের হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের দেড় শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে। পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় চালালেও বিক্ষোভ দমন করতে পারছে না বাইডেন প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা বেড়েছে।

এই পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কিছু দিন ধরে যে আলোচনা চলছে, তা সম্প্রতি নতুন গতি পায়। গত সপ্তাহের শেষ দিকে মিসরের রাজধানী কায়রোয় মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো হামাসকে যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাব দেয়। এরপর সোমবার হামাস জানায়, তারা এই প্রস্তাবে রাজি আছে।

তবে হামাসের ঘোষণার পর ইসরায়েল জানায়, হামাস যে প্রস্তাবে রাজি হয়েছে তাতে তাদের শর্ত পূরণ হয়নি। এ কারণে তারা এ প্রস্তাবে রাজি নয়। একই সঙ্গে ইসরায়েল আরও জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজার রাফায় স্থল অভিযান পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে তারা। এরপর সোমবার রাত থেকেই রাফায় স্থল অভিযান শুরু করে।

হামাসকে যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাব দিয়েছে মধ্যস্থতাকারী তিন দেশ মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। প্রস্তাবে রাজি হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই হামাসের এক জ্যেষ্ঠ নেতা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর প্রস্তাবে রাজি হয়েছে হামাস। বল এখন দখলদার ইসরায়েলের হাতে। এখন তারাই সিদ্ধান্ত নেবে যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাবে তারা রাজি হবে নাকি বাধা দেবে।’

ইসরায়েলের কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাবে রাজি হওয়ার মাধ্যমে হামাস দেখাতে চাচ্ছে, ‘যুদ্ধ বন্ধে তারা আগ্রহী, কিন্তু ইসরায়েলের সদিচ্ছা নেই; বরং তারা যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টায় বাধা দিচ্ছে।’

যুদ্ধবিরতির আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করছেন দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) প্রধান উইলিয়াম বার্নস। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসরায়েলের একাধিক কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে বলেন, তাদের কাছে এখন এটা স্পষ্ট যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে পরিবর্তন আনার বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন সিআইএ প্রধান ও ওয়াশিংটন। কিন্ত ইসরায়েলকে এই বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।

ইসরায়েলের ওই কর্মকর্তারা বলছেন, সোমবার সকালে কাতারের রাজধানী দোহায় যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিল। কিন্ত ইসরায়েলকে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দাবি, হামাস যে প্রস্তাবে রাজি হয়েছে তাতে নতুন অনেক কিছু যুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের কাছে মনে হয়েছে, এটা একেবারেই নতুন কোনো প্রস্তাব।

ইসরায়েলের দুই কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো ইসরায়েলকে নিয়ে ‘খেলছে’ এমন একটা ধারণা তৈরি হয়েছে। এতে ইসরায়েলের মনে ক্ষোভ ও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

ইসরায়েলের এক কর্মকর্তার বরাতে টাইমস অব ইসরায়েল বলছে, মূলত একটি বিষয় নিয়ে ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে একমত হতে পারছে না। হামাস চায় যেকোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্য দিয়ে গাজায় চলমান এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটবে। কিন্ত ইসরায়েল যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে রাজি নয়। ইসরায়েল বলছে, হামাস গাজার শাসনক্ষমতায় যত দিন পর্যন্ত থাকবে, ততদিন গাজায় যুদ্ধ চলবে।

ইসরায়েলের সন্দেহ, যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো হামাসকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে তাদের রাজি হওয়ার মধ্য দিয়ে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটবে। হামাসের একজন শীর্ষ নেতা খলিল আল–হায়া সোমবার আল–জাজিরাকে বলেন, তারা যে প্রস্তাবে রাজি হয়েছে, তা রক্ষা করার দায়িত্ব (গ্যারান্টর) নিয়েছে মিসর। কায়রো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটবে।

ইসরায়েলের তোলা এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে বলেন, ‘মার্কিন কূটনীতিকেরা বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে এসেছেন।’ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাসের রাজি হওয়ার ঘোষণায় ইসরায়েলের বিস্মিত হওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।’

মার্কিন ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, যুদ্ধবিরতির আলোচনা ছিল খুবই জটিল একটি প্রক্রিয়া। ওয়াশিংটনের চাওয়া ছিল, প্রাথমিকভাবে অন্তত ছয় মাসের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে। আর চুক্তি এমনভাবে করা হবে যাতে করে তার মেয়াদ আরও বাড়ানো যায়। এ কারণে তিন ধাপে যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিন ধাপে যুদ্ধবিরতি চলাকালে সব জিম্মি গাজা থেকে পরিবারের কাছে ফিরবেন।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল

আরও পড়ুন

মিয়ানমারে লড়াইয়ের জন্য জড়ো হচ্ছে রোহিঙ্গারা

মিয়ানমারে লড়াইয়ের জন্য জড়ো হচ্ছে রোহিঙ্গারা

অনুবাদ রয়টার্স থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী বসতিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস। ২০১৭ সালে বৌদ্ধ অধ্যুষিত মায়ানমার সরকার দেশটির

যবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ড. এম মজিদের সংবর্ধণা কমিটির প্রস্তুতি সভা

হরিণাকুণ্ডুতে যবিপ্রবির ভিসি অধ্যাপক ড. এম মজিদের সংবর্ধণা কমিটির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

হরিনাকুণ্ড প্রতিনিধি ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুর বরেণ্য শিক্ষাবীদ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সলর অধ্যাপক ড. এমএ মজিদের সংবর্ধনা প্রদান কমিটির

মানুষের ভোটার অধিকার হরণ

‘মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি’

মোস্তাফিজুর রহমান, কোটচাঁদপুর মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি। ধর্ষণ সেঞ্চুরি করে উল্লাস করে এমন স্বাধীনতা আমরা চাইনি।

দরিদ্র মেধাবী ছাত্র নীরবের পাশে মানবতার হাত

দরিদ্র মেধাবী ছাত্র নীরবের পাশে মাও. আবু তালেব

বনি আমিন, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) ঝিনাইদহের মঙ্গলপৈতা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র সালমান ইসলাম নীরবের পড়াশোনার পথে দীর্ঘদিনের আর্থিক

কপ২৯: বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেল দরিদ্র দেশগুলো

কপ২৯: বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেল দরিদ্র দেশগুলো

ডেস্ক রিপোর্ট দীর্ঘ দর-কষাকষির পর সমঝোতায় পৌঁছেছে কপ২৯। বিশ্বের ধনী দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, জলবায়ু সংকটের ঝুঁকিতে থাকা দরিদ্র দেশগুলোকে অভিযোজন