মো. জাহাঙ্গীর আলম, কোটচাঁদপুর
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হাফেজ আকরাম হোসেনকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। তিনি উপজেলার বলুহর ইউনিয়নের এড়ান্দা গ্রামের আলম বিশ্বাসের ছেলে।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!হাফেজ মোহাম্মদ আকরাম হোসেনকে যেভাবে ফাঁসানো হয়েছিল। তার নিজ গ্রাম এড়ান্দা মহল্লার মসজিদে যুবকদের সঙ্গে নিয়ে চৌঠা জুলাই ২০১৬ সাল, ২৮ শে রমজান, রোজ সোমবার একটি ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন, উক্ত ইফতার মাহফিল চলাকালীন সময় হঠাৎ কোটচাঁদপুর থানার অসৎ পুলিশ অফিসার, এসআই সৈয়দ আলী, বুরুজ বল্লব সাধু, এসআই প্রদীপ কুমার সানা, এসআই সমীরণ কুমার বৈদ্য, এএসআই মোয়াজ্জেম সাথে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ইফতার মাহফিলে হানা দিয়ে হাফেজ আকরামকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এক সপ্তাহ গুম করে তাকে অসহ্য নির্যাতন করে।
এরমধ্যে পিতা মাতার খরচ হয়ে যায় লক্ষ লক্ষ টাকা যে টাকাগুলো অসৎ পুলিশ অফিসার সৈয়দ আলীকে দেওয়া হয়। টাকা না দিলে হাফেজ আকরামকে কোরাস ফায়ারে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয় অসৎ পুলিশ অফিসার সৈয়দ আলী। একমাত্র ছেলের কোরাস থেকে বাঁচাবার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা দিতে বাধ্য হয় পিতা-মাতা। পরে ১১/৭/২০১৬ তারিখে অস্ত্র গুলিসহ গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে হাজির করানো হয়। যে মামলায় আসামি করা হয় আরো সাতজনকে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে উপজেলার দয়রামপুর আলিম মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে কিছু সংখ্যক জঙ্গি অস্ত্র-সাজে সজ্জিত হয়ে নাশকতা মূলক কার্য সম্পাদনের জন্য সঙ্ঘবদ্ধ হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওসি সাহেবের নির্দেশে দয়ারামপুর আলিম মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়ে দেখতে পাই কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতকারী এলাকায় নাশকতার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনার নিমিত্তে সমবেত হইয়া সরকার বিরোধী আলোচনা ওই এলাকায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে কথাবার্তা বলতেছিল। আসামিরা সকলেই জামায়াত ও শিবিরের নেতা কর্মী।
মামলার এজাহারে উল্লেখিত সকল তথ্য মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রণোদিত, কাল্পনিক ও সাজানো নাটক। তৎকালীন ফ্যাসিস স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অসৎ পুলিশ অফিসার এসআই সৈয়দ আলী মিথ্যা সাজানো নাটকের মঞ্চ করছিলেন বলে দাবি পরিবারের। ঐ মিথ্যা মামলার সকল সাক্ষীগণ আসামির পক্ষে সাক্ষী দিলেও স্পোশাল ট্রাইব্যাল এর সিনিয়র জজ (ঝিনাইদহ) নাজিমুদ্দৌলা চোখ কান বন্ধ করে তাকে ২৪ বছরের সাজা দিয়েছিলেন ।আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রুস্তম আলী বলেন, দির্ঘ্য আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে হাইকোর্ট থেকে তাকে জমিন করাতে সক্ষম হয়েছি। বুধবার (২২ জানুয়ারি ) সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ কারাগার থেকে মুক্ত হন হাফেজ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন।
জামিনে মুক্ত হবে এমন খবর পেয়ে কোটচাঁদপুর থেকে মানুষ শত শত মোটরসাইকেল যোগে ঝিনাইদহ কারাগারের সামনে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। এরপর সন্ধ্যায় কারাগার থেকে বের হয়ে আসলে হাজার হাজার মানুষ তাকে ফুলের মালা গলায় দিয়ে বরণ করে নেন।
বাবার কাছে ছেলে মুক্তি পাওয়ার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা অর্থদণ্ডসহ আমার বুকের ধনকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল তাদের জন্য আমার পরামর্শ, মানুষ হয়ে মানুষকে যেন এমন ক্ষতি না করে। আর তাদের জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন অচিরেই তাদেরকে হেদায়েত দান করেন।