খেলা ডেস্ক
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!অবশেষে ব্রাজিলের জার্সিতে জ্বলে উঠলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। অবশেষে রাজার মতোই ফিরল ব্রাজিল। কোপা আমেরিকার প্রথম ম্যাচের পর নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনার মুখে ছিলেন ভিনিসিয়ুস। ব্রাজিলের জার্সিতে তাঁর সামগ্রিক পারফরম্যান্সও ছিল ম্লান। সব মিলিয়ে ৩১ ম্যাচে করেছিলেন মাত্র ৩ গোল। এই রিয়াল মাদ্রিদ তারকা শুধুই ক্লাবের খেলোয়াড় কি না, এমন প্রশ্নও তুলেছিলেন কেউ কেউ।
কিন্তু সেরা তারকারা জানেন, কখন জ্বলে উঠতে হয় আর কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়। ভিনিসিয়ুসও ফিরলেন ঠিক সেভাবেই। জোড়া গোলের পাশাপাশি বল পায়েও ছড়িয়েছেন আলো। আর ভিনির সঙ্গে যেন ফিরল ব্রাজিলের ফুটবলও। তাঁর জোড়া গোলের সঙ্গে সাভিও ও লুকাস পাকেতার গোলে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিল জিতেছে ৪-১ গোলে।
এ জয়ে গ্রুপ ‘ডি’তে ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুইয়ে থাকল ব্রাজিল। একই দিন অন্য ম্যাচে কোস্টারিকাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছে কলম্বিয়া। আগামী বুধবার গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া।
নেভাদায় আজ ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেয় ব্রাজিল। বাঁ প্রান্ত দিয়ে পরপর দুবার আক্রমণে যান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র; যদিও শেষ পর্যন্ত গোল আসেনি। সমালোচনার জবাব দিতেই হয়তো আজ শুরু থেকে গতিময় ও প্রত্যয়ী ছিলেন ভিনি।
প্যারাগুয়ে চেষ্টা করছিল ভিনিসহ ব্রাজিলের আক্রমণের গতি নষ্ট করার। ১৫ মিনিটে অবশ্য খেলার ধারার বিপরীতে গোলটা প্রায় পেয়েই গিয়েছিল প্যারাগুয়ে। বক্সের বাইরে থেকে দামিয়ান বোবাদিয়ার শট ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মিলিতাওয়ের গায়ে লেগে জালে জড়াতে গেলে দুর্দান্ত দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন আলিসন। প্যারাগুয়ে এ সময় চেষ্টা করছিল বল নিজেদের পায়ে রেখে ব্রাজিলকে সহজাত খেলাটা খেলতে না দেওয়ার।
এর মধ্যে আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে ম্যাচের ৩০ মিনিটে ব্রাজিলকে পেনাল্টি উপহার দিয়ে বসে প্যারাগুয়ে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল। পেনাল্টি মিস করেন লুকাস পাকেতা। কিন্তু ৩৫ মিনিটে দুর্দান্ত এক আক্রমণ থেকে ঠিকই গোল আদায় করে নেয় ব্রাজিল।
ম্যাচের শুরু থেকে গতিময় ও দুর্দান্ত খেলতে থাকা ভিনিসিয়ুস দারুণ ফিনিশিংয়ে এগিয়ে দেন ব্রাজিলকে। দারুণ নৈপুণ্যে এই গোলে অবদান রাখেন পেনাল্টি মিস করা পাকেতাও। গোল খেয়ে জেগে ওঠার চেষ্টা করে প্যারাগুয়ে। পরপর দুবার আক্রমণেও যায় তারা। কিন্তু সমতা ফেরাতে পারেনি।
উল্টো ৪৩ মিনিটে দ্বিতীয় গোলও আদায় করে নেয় তারা। দারুণ এক আক্রমণ থেকে শুরুতে রদ্রিগোর শট প্রতিহত হলেও ফিরতি শটে ঠিকই বল জালে জড়ান সাভিও। এই গোলের পর দুই দলের খেলোয়াড়েরা সংঘাতেও জড়ান। তবে গোল ও সংঘাতের রেশ কাটার আগেই যোগ করা সময়ে নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোল আদায় করে নেন ভিনিসিয়ুস। ব্রাজিলের বিদ্যুৎ–গতির আক্রমণে রদ্রিগোকে ঠেকিয়ে দেয় প্যারাগুয়ে ডিফেন্স, কিন্তু ছুটে এসে নেওয়া দারুণ এক শটে ঠিকই গোল আদায় করে নেন ভিনিসিয়ুস।
বিরতির পর ৪৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ওমর আলদারেতের দুর্দান্ত এক গোলে ব্যবধান ৩-১ করে প্যারাগুয়ে। এক গোল শোধ করে ব্রাজিলের ওপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করে প্যারাগুয়ে। এর মধ্যে আলিসন বাধা না হলে ব্যবধান ৩-২ করতে পারত প্যারাগুয়ে। তবে প্যারাগুয়ে দ্বিতীয় গোল না পেলেও ব্রাজিল ঠিকই চতুর্থ গোলটি আদায় করে নেয়। ৬৩ মিনিটে বক্সের ভেতর হ্যান্ডবলের কারণে আবার পেনাল্টি উপহার পায় ব্রাজিল।
প্রথমবারের মতো এবারও শট নিতে আসেন পাকেতা। তবে এবার আর ভুল করেননি। ব্রাজিলকে এনে দেন ম্যাচের চতুর্থ গোল। চার গোল খেয়ে ম্যাচে ফেরার আর কোনো সুযোগ ছিল না প্যারাগুয়ের। উল্টো ৮১ মিনিটে প্যারাগুয়ের মিডফিল্ডার কুবাস লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় প্যারাগুয়ের জন্য; যদিও আর কোনো গোল হজম করেনি তারা।